‘আমি মরতে চাই না’, মৃত্যুর আগে বাঁচার কাতর আর্তি সতীশের, কী বলেছিলেন ম্যানেজারকে
সতীশ কৌশিকের মৃত্যুর পর প্রায় ৩ দিন পেরিয়ে গেল। এখনও যেন অনেকেই তাঁর চলে যাওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না। ৯ মার্চ ভোর রাতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় তাঁর। তবুও তাঁকে যাঁরা ভালোবাসতেন, তাঁর কাজ দেখতে পছন্দ করতেন তাঁদের জীবনে যেন একটা শূন্যতা তৈরি হয়েছে। তাঁরা যেন মানতেই পারছেন না এই মানুষটা আর নেই। এমন অবস্থাতেই তিনি মৃত্যুর আগে কী বলেছিলেন শেষবার সেটাই প্রকাশ্যে এল।
সতীশ কৌশিকের ম্যানেজার, সন্তোষ সেই রাতে তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তিনি জানালেন শেষ সময়ে কী কী বলেছিলেন কৌশিক তাঁকে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার তরফে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয় তাঁর সঙ্গে। তিনি জানান যখন থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট শুরু হয় বা যখন তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সেই পুরো সময়টাই তিনি তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
সন্তোষ জানিয়েছেন সতীশের কোনও রকম অ্যাসিডিটি, বা গ্যাস হয়নি। এমনকি রাতে খাবার পরও তাঁর মধ্যে কোনও অস্বস্তির লক্ষণ দেখা যায়নি। কী বললেন তিনি? সন্তোষের কথায়, ‘ উনি ৮.৩০টা নাগাদ রাতের খাবার খেয়ে নেন। আমাদের পরদিন, ৯ মার্চ সকাল ৮.৫০ এ ফ্লাইট ছিল মুম্বই ফেরত যাওয়ার। উনি আমায় বললেন সন্তোষ চলো আজ জলদি শুয়ে পড়ি, সকালে ফ্লাইট ধরতে হবে। আমি ওঁকে বলি ঠিক আছে স্যার। এরপর আমরা যে যার ঘরে শুতে চলে যাই। রাত ১১টা নাগাদ উনি আমায় ফোন করে বলেন, সন্তোষ তুমি আমার ঘরে এসো, আমার WiFi পাসওয়ার্ড ঠিক করে দাও আমি কাগজ ২ দেখব এডিট করার জন্য। উনি ১১.৩০টা নাগাদ ছবিটা দেখছিলেন। আমি আমার ঘরে ফিরে আসি তখন।’
তিনি এই বিষয়ে আরও বলেন, ‘১২.০৫ এ উনি আমায় চিৎকার করে ডাকতে থাকেন। আমি ছুটে ওঁর কাছে আসি। আমি জিজ্ঞেস করি স্যার কী হয়েছে? চিৎকার করছেন কেন? উনি আমায় বলেন আমার শ্বাসকষ্ট হচ্ছে আমায় ডাক্তারের কাছে নিয়ে চলো। এরপরই আমরা গাড়িতে উঠি।’
তিনি জানান এই সময় তিনি একা নন, বরং সতীশের ড্রাইভার, বডিগার্ড দুজনেই ছিলেন। উনি ২৪ ঘণ্টার জন্য একজন ড্রাইভার রেখেছিলেন।
এরপর কী হয়? সতীশ কৌশিকের ৩৪ বছরের সঙ্গী, কর্মী সন্তোষ জানান, আমরা কিছুদূর এগোনোর পরই ওঁর বুকে ব্যথা বাড়তে থাকে। ও বলতে থেকে জলদি চলো। আমার কাঁধে উনি মাথা রেখে বলতে থাকে, সন্তোষ আমি মরতে চাই না। আমায় বাঁচাও। রাস্তা ফাঁকা থাকার দারুন আমরা ৮ মিনিটের মধ্যেই হাসপাতালে পৌঁছে যাই। কিন্তু আমরা যখন হাসপাতালে ঢুকি ততক্ষণে উনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছেন।’
তবে মৃত্যুর আগেই কি তিনি তার টের পেয়েছিলেন? নইলে সকালে ম্যানেজারকে অমন কথা বলবেন কেন? কী বলেছিলেন? সন্তোষের কথায়, ‘বংশিকার জন্য আমি বাঁচতে চাই। কিন্তু মনে হচ্ছে আমি বেশিদিন বাঁচব না। শশী আর বংশিকার খেয়াল রেখো।’
তিনি কথায় কথায় জানান তিনিই অভিনেতার বোনের পরিবার সহ অনুপম খের, বনি কাপুর সহ সকলকে খবর দিয়েছিলেন। গাড়িতে থাকতে থাকতেই সাড়া দেওয়া বন্ধ করে দেন অভিনেতা। হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে বাঁচানোর চেষ্টা করলেও সে সম্ভব হয় না।
For all the latest entertainment News Click Here