আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে রিহ্যাবে আটকে রেখেছিল- জীবনের কালো অধ্যায় সামনে আনলেন আক্রম

খেলার মাঠের বাইরে আগ্রাসন দেখাননি কখনও। পাকিস্তান ক্রিকেট টিমের অত্যন্ত শান্ত, ভদ্র, বিতর্কহীন ক্রিকেটার বলেই তিনি পরিচিত। সেই ওয়াসিম আক্রমই কিনা নিজের জীবনের এক কালো অধ্যায় প্রকাশ্যে এনেছেন।

আক্রম জানিয়েছেন, আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের পর মাদকের প্রতি আকর্ষণ শুরু হয় তাঁর। প্রায় ছ’বছর ধরে নিয়মিত মাদকসেবন করেছেন তিনি। এমন কী আকৃষ্ট হয়ে পড়েছিলেন কোকেনের প্রতি।

ওয়াসিম আক্রম তাঁর আত্মজীবনী ‘সুলতান: আ মেমোয়ার’এ ক্রিকেট থেকে অবসর-পরবর্তী কোকেনে আসক্তির বিষয়ে মুখ খুলেছেন। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই মাদকের নেশা ছাড়ানোর জন্য তাঁকে তাঁর ইচ্ছের বিরুদ্ধে আড়াই মাস পাকিস্তানের রিহ্যাবে রাখা হয়েছিল।

আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর যখন তিনি ইংল্যান্ডে ছিলেন তখন কোকেনের প্রতি আসক্তি তৈরি হয় তাঁর। আক্রম জানিয়েছেন, ‘ক্রিকেট ছাড়ার পর কোনও কিছুতে নিজেকে ডুবিয়ে দিতে চেয়েছিলাম। দক্ষিণ এশিয়ার মানুষরা কোনও নেশা এবং দুর্নীতিতে ডুবে থাকতে ভালোবাসে। এক রাতে তারা দশটা পার্টিতে যায়। আমারও সেই কাজ করতে গিয়ে অবস্থা খারাপ হয়ে গিয়েছিল।’

আরও পড়ুন: কোহলির সঙ্গে নৈনিতালে দেখা করার জন্য কী করলেন তাঁর অন্ধ ভক্ত, জানেন?- ভিডিয়ো

আক্রম আরও জানিয়েছেন, ‘সবচেয়ে খারাপ হয়, যখন কোকেনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ি। ইংল্যান্ডে একটা পার্টিতে গিয়ে আমার প্রথম কোকেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে অভ্যাস বেড়ে যেতে থাকে। একটা সময় মনে হত, শারীরিক কাজকর্ম করতে হল কোকেন নিতেই হবে।’

এবং যখন তাঁর প্রথম স্ত্রী হুমা তাঁর এই আসক্তি সম্পর্কে জানতে পারেন, তখন স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছিল। এই কোকেনের অভ্যাসের কারণে হুমার সঙ্গে এক সময়ে ডিভোর্সের কথাও ভেবেছিলেন আক্রম। এবং তাঁর স্ত্রীই তাঁকে রিহ্যাবে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। এতে রাজি হয়েছিলেন আক্রম। পাকিস্তানে ফিরে আক্রম রিহ্যাবেও যান।

তাঁর ব্যাখ্যায়, ‘আমি এক মাসের জন্য রিহ্যাবে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু ওরা আমাকে অনুমতি ছাড়াই আড়াই মাস সেখানে রেখে দিয়েছিল। বিশ্বে এটাকে বেআইনি মনে করা হলেও, পাকিস্তানে এ রকম কিছু নেই।’

আরও পড়ুন: ICC T20 WC 2022 হারের পর BCCI-এর আর একটি বড় পদক্ষেপ! ছেঁটে ফেলা হল এই কোচকে

তাঁর দাবি, রিহ্যাব কেন্দ্রগুলি সম্পর্কে তাঁর আলাদা একটি ধারণা ছিল। তবে তিনি পাকিস্তানে যে ধরনের রিহ্যাবে ছিলেন, সেটাকে তিনি ‘ভয়াবহ’ বলে অভিহিত করেছেন। আক্রমের মতে, ‘পাশ্চাত্যের মুভিতে, এমন কী অস্ট্রেলিয়াতেও আপনি দেখতে পাবেন যে, রিহ্যাব কেন্দ্রগুলিতে সুন্দর বড় লন আছে, লোকেরা বক্তৃতা দেয়, আপনি জিমে যান। কিন্তু আমি একটি করিডোর এবং আটটি কক্ষ সহ এমন একটি জায়গায় (পাকিস্তানে) গিয়েছিলাম, যেখানে থাকা খুব কঠিন ছিল। এটি একটি ভয়ঙ্কর সময় ছিল।’

শেষ পর্যন্ত স্ত্রী হুমা প্রয়াত হওয়ার পরে তাঁর জীবন বদলে যায়। আক্রম জানিয়েছেন, ‘তার পর একটি ট্র্যাজেডি ঘটে, আমার স্ত্রী মারা যায়। আমি জানতাম, আমি ভুল পথে ছিলাম, আমি এটি থেকে বেরিয়ে আসতে চেয়েছিলাম। আমার দু’টি ছোট ছেলে ছিল। তাদের দায়িত্ব নিতে হয়। আমাকে ওদের বন্ধু হয়ে উঠতে হয়েছিল।’

এখন তিনি পুরোপুরি কোকেনের কালো ছায়া থেকে বের হয়ে আসতে পেরেছেন। এবং তরুণ প্রজন্ম যাতে ভুল পথে না যায়, সেই জন্য পরামর্শ দিয়ে আক্রম বলেছেন, ‘তরুণ প্রজন্মের প্রতি আমার পরামর্শ হল, বন্ধুদের সাবধানে বেছে নিতে হবে। বন্ধুরা যদি এমন হয়, তা হলে আপনি ভুল পথে যেতে বাধ্য। এবং খুব কম লোকই সেই পথ থেকে বেরিয়ে আসতে পারে। তাই বন্ধুত্ব করার আগে তাদের বুঝে নিতে হবে।’

For all the latest Sports News Click Here 

Read original article here

Denial of responsibility! TechAI is an automatic aggregator around the global media. All the content are available free on Internet. We have just arranged it in one platform for educational purpose only. In each content, the hyperlink to the primary source is specified. All trademarks belong to their rightful owners, all materials to their authors. If you are the owner of the content and do not want us to publish your materials on our website, please contact us by email – [email protected]. The content will be deleted within 24 hours.