আপনাকে ‘পা’-এর মত দেখতে লাগছে! পরাণের ছবি দেখে চমকে উঠেছিলেন অভিষেক
৯ বছর পেরিয়ে ফিরছে বব বিশ্বাস। তবে বদলে যাচ্ছে তাঁর মুখ। শাশ্বত নয়, সুজয়-কন্যা দিব্যা অন্নপূর্না ঘোষের হাত ধরে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম জি ফাইভে আসছে বব বিশ্বাস হিসেবে নাম ভূমিকায় রয়েছেন অভিষেক বচ্চন। ইতিমধ্যেই মুক্তি পেয়েছে ছবির ট্রেলার। সেখানে বলি-অভিনেতাদের পাশাপাশি দেখা গেছে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রজতাভ দত্তের মতো একাধিক সব জনপ্রিয় মুখ। ছবিতে অভিষেকের সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিকোয়েন্সে স্ক্রিন শেয়ার করেছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। ট্রেলারেও একসঙ্গে দেখা গেছে তাঁদের। সেই এক ঝলকেই দর্শকদের নজর কেড়েছেন তিনি। এবার ফোনের ওপার থেকে ‘বব বিশ্বাস’-এ ‘জুনিয়র বচ্চন’-এর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা শেয়ার করলেন টলিপাড়ার এই জনপ্রিয় অভিনেতা।
ছবিতে এক হোমিওপ্যাথি দোকানের মালিক হিসেবেই দর্শকদের সামনে হাজির হবেন পরাণবাবু। অঞ্চলে তাঁর পরিচিতি ‘পাল বাবু’ হিসেবেই। স্মৃতিশক্তি হারালেও মানুষ মারার কাজে ফিরতে হচ্ছে বব বিশ্বাসকে। সেই সঙ্গে অবিরামভাবে সে চেষ্টা চালাচ্ছিল নিজের ফিকে হয়ে যাওয়ার স্মৃতিকে স্পষ্ট করার। সেই ঘটনাচক্রেই তাঁর আলাপ ‘পাল বাবু’-র সঙ্গে। ‘ তবে আপাতদৃষ্টিতে সাদামাঠা এক হোমিওপ্যাথি ওষুধের বিক্রেতা হলেও সেটাই কিন্তু ছবিতে পাল বাবুর একমাত্র পরিচয় নয়’, ফোনের ওপর থেকে অল্প হেসে জানালেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এইটুকুই। নিজের অভিনীত চরিত্রের বিষয়ে এর থেকে বেশি কিছু ফাঁস করতে না চাইলেও ‘ পাল বাবু’ যে মোটেই সহজ মানুষ নয় এবং চরিত্রটি বেশ ধূসর সে বিষয়ে বলতে কোনও দ্বিধা করলেন না এই বর্ষীয়ান অভিনেতা।
অভিষেক বচ্চনের প্রসঙ্গ উঠতেই একমুহূর্ত সময় না নিয়ে ‘সিনেমাওয়ালা’ বলে ওঠেন, ‘নিপাট ভদ্রলোক। আমি ওঁর সঙ্গে এই ছবিতে কাজ করেছি দু-তিনদিন। দেখেছি সেটের মধ্যে হাসাহাসি করছে, গল্প আড্ডায় মশগুল। কখনও রসিকতা করে এর ওঁর পিছনেও লাগছে। বচ্চন পরিবারের সদস্য বলে একফোঁটাও অহঙ্কার দেখেনি ওঁর মধ্যে। আমার সঙ্গে যথেষ্ট নম্র আচরণ করেছে। চিত্রনাট্য বেশ যে গুছিয়ে পড়ে তৈরি হয়ে এসেছে তা বুঝতে পারতাম। সংলাপ খুব বেশি এদিক ওদিক হতো না। শুধু শট নেওয়ার আগে এক, দু’বার রিহার্সাল করে নিতাম। ব্যাস! ওটুকুই’। সামান্য থেমে ফের বললেন, ‘অভিষেক বাংলা বেশ বোঝে কিন্তু বলতে পারে না ঠিকঠাক। এদিকে আমার আবার ইংরেজিটা খুব ভালো আসে না। তাই ভাঙা ভাঙা হিন্দিতেই ওঁর সঙ্গে গল্প আড্ডা করেছি। বিন্দুমাত্র অসুবিধে হয়নি। ও পাল্টা জবাব দিয়েছে, মজা করেছে। তবে হ্যাঁ, একটা মজার ব্যাপার ঘটেছিল একদিন’।
ফোনের ওপারে তখন হাসি। তা থামলেও হাসির ছোঁয়ে রেখেই কথা শুরু করলেন পরাণ বাবু। ‘ বহু বছর আগে পূর্ব-পশ্চিম নামের একটি ধারাবাহিকে অভিনয় করেছিলাম। সেখানে এক ওস্তাদ গাইয়ের চরিত্রে অভিনয় করেছিলাম। আমাকে যেভাবে মেক-আপ করা হয়েছিল তা দেখে যে কেউ বলে উঠবেন ‘আখরি রাস্তা’ ছবির অমিতাভ বচ্চন! মানে ‘ডেভিড’ এর চরিত্রটি এতটাই মিল ছিল। ওরকম পেপার অ্যান্ড সল্ট রঙের চুল, চাপদাড়ি, ওরকম চশমা। তার উপর অমিতাভের মতো আমারও একটি চোখ সামান্য ছোট, নাকটি লম্বা। সবমিলিয়ে মেক আপের পর ওরকমই লাগছিল। একদিন আমার ছেলেকে বললাম সেটে সে যেন আমার সেই ছবিটা নিয়ে আসে। এরপর একদিন শ্যুটিংয়ে ব্রেকের ফাঁকে অভিষেকের হাতে আমার সেই ছবিটি ধরিয়ে দিয়েছিলাম। দেখামাত্রই চমকে উঠেছিল সে! তারপর শিশুর মতো হেসে বলেছিল, ‘ আরে! এটা কে? আপনি? সত্যিই তো আপনাকে পা-এর মতো লাগছে অনেকটা। ‘আখরি রাস্তা’-র সেই ‘ডেভিড’ লুকটা না?’ আমি তখন মিটিমিটি হাসছি’।
কথা শেষে পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-এর সংযোজন, গোটা ছবির শ্যুটিংয়ে পরিচালক-প্রযোজক সুজয় ঘোষ ইউনিটের সঙ্গে ছিল। তাঁর মেয়ে এ ছবির পরিচালক হলেও নিজের পরিচালিত ছবির মতো সব অভিনেতা, কলাকুশলীদের কাছে ছোটাছুটি করেছে সে। তবে পরিচালক হিসেবে অন্নপূর্ণাও অত্যন্ত সম্ভাবনাময়ী। বাবার নাম রাখবে বলেই দৃঢ় বিশ্বাস ‘পাল বাবু’-র। আগামী ৩রা ডিসেম্বর জি ফাইভ অ্যাপে মুক্তি পাবে শাহরুখ খান, গৌরী খানে রেড চিলিজ এন্টারটেনমেন্টেক এই ছবি।
For all the latest entertainment News Click Here