আটবারের চ্যাম্পিয়ন ফেডেরারকেই উইলম্বডনে ঢুকতে দিলেন না মহিলা কর্মী! ফাঁস রজারের
আটবারের চ্যাম্পিয়ন। কিন্তু মেম্বারশিপ কার্ড দেখাতে না পারায় সেই রজার ফেডেরারকেই উইলম্বডনে ঢুকতে দিলেন না মহিলা নিরাপত্তারক্ষী। যে ঘটনা নিজেই ফাঁস করলেন টেনিস দুনিয়ার সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড়। সেই ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়ে গিয়েছে।
দ্য ডেইলি শো’তে ফেডেরারের কাছ থেকে সঞ্চালক ট্রেভর নোয়ার জানতে চান, তাঁকে উইলম্বডনে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে যে কানাঘুষো শুনেছেন, সেটা সত্যি কিনা। সেই প্রশ্নের প্রেক্ষিতে নিজেই পুরো ঘটনার ব্যাখ্যা দেন ফেডেরার। তিনি জানান, স্পনসর সংক্রান্ত কাজের জন্য টোকিয়োয় গিয়েছিলেন। হাঁটুর চিকিৎসার জন্য ফেরার পথে লন্ডনে এসেছিলেন। তারপর দেশে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। তখনই সেই ঘটনা ঘটে।
ফেডেরার বলেন, ‘আমার হাঁটু নিয়ে অন্য চিকিৎসকের মতামত নেওয়ার জন্য লন্ডনে এসেছিলাম। সম্প্রতি আমার হাঁটুর অবস্থা ভালো যাচ্ছে না। উইলম্বডন কর্তৃপক্ষকে আমি আগে থেকে জানাইনি যে আমি ওখানে যেতে পারি। কারণ আমি জানতাম যে আমার হাতে সময় থাকবে কিনা। আমায় বাড়ি ফেরার বিমান ধরতে হত।’
ফেডেরার জানান, ডাক্তার দেখানোর পর হাতে দু’ঘণ্টা ছিল। সময় কাটানোর জন্য উইলম্বডনে ঘুরে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘টুর্নামেন্ট যখন চলছে না, তখন আমি কখনও উইলম্বডনে যাইনি। (উইলম্বডনের) যেখান দিয়ে সাধারণত অতিথিরা আসেন, সেখানে গাড়ি নিয়ে যাই। আমি কোচকে বলি যে আমি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীর সঙ্গে কথা বলছি। আমি দেখে নিচ্ছি (হাসি)। কিন্তু আমি পারিনি (হাসি)।’
তারপর কী হয়েছিল? ফেডেরার বলেন, ‘আমি মহিলা নিরাপত্তারক্ষীর কাছে যাই। তাঁর সঙ্গে কুশল বিনিময় করে বলি যে কীভাবে উইলম্বডনের ভিতরে ঢুকব। (জানতে চাই), দরজা কোথায়, গেট কোথায়? (আমার কাছে) মেম্বারশিপ কার্ড আছে কিনা, উনি জানতে চান। কিন্তু (তখন) আমার কাছে ছিল না। আপনি উইলম্বডন জিতলে এমনিতেই সদস্য হয়ে যান। সত্যি কথা বলতে আমি মেম্বারশিপ কার্ডের বিষয়ে জানতাম না। ঘরে হয়ত ছিল।’
ফেডেরার আরও বলেন, ‘আমি বলি যে আমার কাছে মেম্বারশিপ কার্ড নেই। কিন্তু আমি উইলম্বডনের সদস্য। আমি কীভাবে ভিতরে ঢুকতে পারব? উনি বলেন যে আপনাকে সদস্য হতে হবে। আমি ভাবলাম যে এখানে (ভিতরে ঢোকা) অত্যন্ত কঠিন কাজ। আমি বোঝাতে থাকি যে আমি উইলম্বডনের সদস্য। আমি সাধারণত এখানে আসি, তখন আমি খেলি। তখন প্রচুর মানুষ থাকেন। আমি অন্য জায়গা দিয়ে আসি। যখন টুর্নামেন্ট চলছে, সেইসময় আমি প্রথমবার এলাম। তাই আমি জানি না যে কোথা দিয়ে ঢুকতে হবে। উনি বলেন যে অন্যদিক থেকে দিয়ে ঢুকতে পারব। কিন্তু আপনার কাছে সদস্যপদ থাকতে হবে।’
তারপরও অবশ্য শেষ চেষ্টা করে দেখেছিলেন ফেডেরার। ওই অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘শেষবারের মতো ওঁনাকে দেখি। আমি কিছুটা বিভ্রান্ত হয়ে পড়ি। কিন্তু তারপর যেটা বলেছিলাম, সেটা যে আমি বলেছিলাম, তা ভাবতেও পারি না। এখনও ভাবতে পারছি না। আমি কখনও এটা বলি না। তাই আমার খারাপও লাগছিল। আমি তাঁর দিকে তাকিয়ে বলি যে আমি আটবার এই টুর্নামেন্ট জিতেছি। দয়া করে বিশ্বাস করুন যে আমি একজন সদস্য, আমি কীভাবে ঢুকব। (কিন্তু তাতে কোনও লাভ হয়নি)। আমি তারপর গাড়িতে ফিরে আসি। কোচ জানতে চায় যে কী হল। আমি বলি যে কোনও কথা বল না।’
ফেডেরার জানান, সেই ঘটনার পর অন্য গেটের দিকে চলে গিয়েছিলেন। সেখানে তাঁকে মেম্বারশিপ কার্ড দিয়েই ঢুকতে দেওয়া হয়েছিল। তবে ওই মহিলাকর্মীকে আটটি উইলম্বডন জিতেছেন বলার বিষয়টির কারণে তাঁর এখনও খারাপ লাগে বলে জানান ফেডেরার। যদিও সঞ্চালক আশ্বস্ত করেন, ফেডেরার কখনও খারাপ ব্যবহার করেন না। তাঁকে কেউ চিনতে না পারলেও খুব স্বাভাবিকভাবেই কথা বলেন। সেইসঙ্গে মজা করে ওই মহিলা কর্মীরও বেতন বৃদ্ধির সওয়াল করেন সঞ্চালক। যিনি নিখুঁতভাবে নিজের দায়িত্ব পালন করেছিলেন।
For all the latest Sports News Click Here