আইডল গিলক্রিস্ট, অনুপ্রেরণা দাদা ইশান, ডেবিউতে বাংলাকে জিতিয়েও নির্লিপ্ত অভিষেক
রঞ্জি মরশুমের প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানে অলআউট হওয়ার শাপমোচন করে বরোদার বিরুদ্ধে ৩৪৯ রান তাড়া করে এক ঐতিহাসিক ম্যাচ জিতেছে বাংলা। দলের হয়ে নিজের ডেবিউ ম্যাচেই ক্রিজে শেষ পর্যন্ত টিকে থেকে দলকে ম্যাচ জিতিয়ে ফিরেছেন তরুণ অভিষেক পোড়েল। প্রথম ম্যাচেই এমন দুর্ধর্ষ পারফর্ম করলেও কোনো বাড়তি উচ্ছ্বাস ধরা পড়ল না তাঁর গলায়।
হিন্দুস্তান টাইমস বাংলাকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে নিজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন বাংলার উঠতি উইকেটকিপার-ব্যাটার। এক সময় ২৪২ রানের মাথায় দলের সবচেয়ে অভিজ্ঞ তারকা মনোজ তিওয়ারির উইকেট হারিয়ে ভীষণ চাপে পড়ে যায় বাংলা। তবে সপ্তম উইকেটে শাহবাজ আহমেদের সঙ্গে অপরাজিত ১০৮ রানের জুটি বেঁধে দলকে জয় এনে দিয়েছেন অভিষেক। চাপের মুখেও মাথা ঠান্ডা রেখে ম্যাচ বের করে তিনি বলেন, ‘রান তাড়া করার চাপ তো ছিলই। তবে অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ম্যাচ না খেললেও দেখেছি কীভাবে ম্যাচ শেষ করতে হয়। বিরাট ভাইয়ার (কোহলি) সঙ্গেও কথা হয়েছে। উনি ছোট্ট ছোট্ট পরামর্শ দিয়েছেন যা কাজে লেগেছে। আর ম্যাচের মধ্যে শাহবাজদা সমানে আমাকে গাইড করে গিয়েছেন।’
চন্দনগরের পোড়েল পরিবারের অভিষেক কিন্তু একা নন, এই ম্যাচে বল হাতে দলের জয়ের বড় ভূমিকা নিয়েছেন তার তুতো দাদা ইশানও। দাদা ইশানই কিন্তু অভিষেকের অনুপ্রেরণাও বটে। ‘ম্যাচের আগে দাদা সাফ বলেছিল বাড়তি কিছু করার প্রয়োজন নেই। অনুর্ধ্ব ১৯ আগেও ম্যাচ জিতিয়েছিল। এতদিন যা করেছিস, সেই ভাবেই খেলে যা। এটা কিন্তু আমায় বেশ সাহায্যই করেছে। ও আমার আগে বাংলার হয়ে খেলেছে, অনেক অভিজ্ঞতা রয়েছে ওর। এমন একজনকে পাশে পাওয়া তো সব সময়ই ভাগ্যের বিষয়।’ ঘটনাক্রমে, দাদা ইশানের বলেই নিজের প্রথম ক্যাচটি ধরেন ভাই অভিষেক। গোটা বিষয়টাই কিন্তু তার কাছে একটু বাড়তি আনন্দের ছিল।
তবে প্রথম ইনিংসে ৮৮ রানে অলআউট হওয়ার লজ্জার পর ঠিক তার পরের ইনিংসেই রঞ্জির ইতিহাসে পঞ্চম সর্বোচ্চ রান তাড়া করে ম্যাচ জেতে। ব্যাপারটা কিন্তু একেবারেই সহজ নয়। তবে প্রথম ইনিংসে ভরাডুবির পরেও দলের সকলের মধ্যেই জয়ের আত্মবিশ্বাস ছিল বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিচ্ছেন অভিষেক। ‘প্রথম ইনিংসে আমাদের একটু গড়বড় হয়ে গিয়েছিল, কিন্তু দলের সবাই ম্যাচ জেতার জন্য বদ্ধপরিকর ছিল। আমরা রঞ্জি ফাইনাল খেলেছি। দলের সাপোর্ট স্টাফ হোক বা খেলোয়াড়, সকলে তাই আত্মবিশ্বাসী ছিলেন যে এই অবস্থা থেকে আমরা ম্যাচ জিততে পারব। দিনের শেষে এই বিশ্বাসটাই খুব বড় সাহায্য করেছে।’
নিজের রঞ্জি অভিষেকে মনোজ তিওয়ারির হাত থেকে বাংলার টুপি পেয়ে গর্বিত অভিষেক। আর বাঁ-হাতি উইকেটকিপার ব্যাটারের পছন্দের ক্রিকেটার, নাম শুনলে কিন্তু কেউই অবাক হবেন না। ‘রোল মডেল বলতে গেলে অ্যাডাম গিলক্রিস্টকে আমার বরাবরই ভীষণ পছন্দ। ভারতীয়দের মধ্যে বলতে হলে এম এস ধোনি রয়েছেন, অবশ্যই পাপালিদা (ঋদ্ধিমান সাহা) রয়েছেন। সম্প্রতি পাপালিদার সঙ্গে কথা হয়নি, তবে সুযোগ হলে অনেক কিছু শেখার অপেক্ষায় রয়েছি।’ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের মূল দলে সুযোগ পাননি। তবে দুর্ধর্ষ এক ডেবিউ ম্যাচের পর পিছনের দিকে ফিরে না তাকিয়ে নিজের কাজটাই করে যেতে বদ্ধপরিকর অভিষেক পোড়েল।
For all the latest Sports News Click Here