অশ্বিনের ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ টিমের জন্য একেবারেই ভালো নয়, দাবি প্রাক্তন কিপারের
রবি শাস্ত্রী যখন কোচ ছিলেন, সেই সময়ে রবিচন্দ্রন অশ্বিনকে সবচেয়ে বেশি বঞ্চিত হতে হয়েছিল বলে দাবি করেছেন স্বয়ং তারকা অফ-স্পিনার। সত্যি কথা বলতে, অশ্বিনের সঙ্গে যে অবিচার হয়নি, তা নয়। তিনি কিন্তু দিনের পর দিন তাঁকে অনেক কিছুই সহ্য করতে হয়েছিল। বিশ্বের অন্যতম সেরা স্পিনার হওয়া সত্ত্বেও সংক্ষিপ্ত ওভারের ক্রিকেট থেকে একেবারে বাদ দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। ফর্ম থাকা সত্ত্বেও টেস্ট ক্রিকেট থেকে তাঁকে একেবারে ছেঁটে ফেলারও পরিকল্পনা শুরু করেছিলেন বিরাট কোহলি। মুখ বন্ধ করছিলেন রবি শাস্ত্রীও। নিঃসন্দেহে তাঁরও এই ঘটনায় মদত ছিল। এ বার সেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন অশ্বিন। এক হাত নিয়েছেন শাস্ত্রীকে। তবে নিজেকে সংযত না করে প্রকাশ্যে এ ভাবে অশ্বিনের ক্ষোভ উগড়ানোর বিষয়টি ভালো ভাবে নেননি ক্রিকেট মহলের অনেকেই। ভারতের প্রাক্তন উইকেটকিপার সাবা করিম মনে করেন, এ ভাবে প্রকাশ্য কোনও মন্তব্য করার বিষয়ে প্লেয়ারদের দায়বদ্ধতা আরও বেশি হওয়া উচিত।
এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটকে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অশ্বিন ২০১৯ অস্ট্রেলিয়া সফরের কথা টেনে এনেছেন। আসলে সেই সফরের সিডনি টেস্টে কুলদীপ যাদব পাঁচ উইকেট পাওয়ার পর শাস্ত্রী বলে দিয়েছিলেন, এর পর থেকে বিদেশে ভারতের এক নম্বর স্পিনার কুলদীপই হবেন। যা শোনার পর স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিলেন অশ্বিন। সেই প্রসঙ্গ টেনে অশ্বিন বলেছেন, ‘আমাদের শেখানো হয়, সতীর্থের সাফল্যে আনন্দ করতে। কুলদীপের জন্য আমার ভালো লাগছিল। কুলদীপের জন্য, টিমের জন্য অসম্ভব ভালো লাগছিল। কারণ, তার আগে কখনও অস্ট্রেলিয়ায় টেস্ট সিরিজ জিতিনি আমরা। কিন্তু টিমের সাফল্যে আনন্দ পেতে আগে নিজেকে বোঝাতে হয় যে, আমিও টিমের অংশ। যদি আমার মনে হয়, কেউ আমাকে বাস চাপা দিয়ে দিয়েছে, কী করে টিমের সাফল্যে আনন্দ পাব? রবি ভাইকে আমি শ্রদ্ধা করি। সম্মান করি। কিন্তু সে দিন এই কথাটা শুনে মনে হয়েছিল, আমাকে কেউ থেঁতলে দিয়েছে।’
সেই সিরিজের প্রথম টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে কুঁচকির চোট নিয়ে পঞ্চাশ ওভার বল করেছিলেন অশ্বিন। ৩ উইকেট নিয়েছিলেন। সবে যখন তাঁর মনে হচ্ছিল যে, টিমের জন্য তাঁরও অবদান রয়েছে। তখন জানতে পারেন, তাঁর পারফরম্যান্স নিয়ে ঠাট্টা-ইয়ার্কি চালছে। অশ্বিন বলেছেন, ‘প্রথমে নিজের মনে হয়েছিল, তাও চোট নিয়েও টিমের জন্য কিছু তো করতে পেরেছি। কিন্তু ফিরে এসে শুনলাম বলা হচ্ছে, নাথন লায়ন ছ’উইকেট নিয়েছে। আর অশ্বিন নিল তিনটে। এমনিই যন্ত্রণায় কাবু হয়ে ছিলাম। মন মেজাজ ভালো ছিল না। সেই সময় ও রকম তুলনা আর অপমান। সিডনি টেস্টের আগে পর্যন্ত আমার মনেই হয়নি যে আমিও টিমের অংশ।’ তখন ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার কথাও ভেবেছিলেন অশ্বিন।
এই প্রসঙ্গে ‘Khelneeti podcast’.-এ সাবা করিম বলেছেন, ‘যখন এই জিনিসগুলি প্রকাশ্যে আসতে শুরু করে, তখন টিমের মধ্যে স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি করা কঠিন হয়ে যায়। যে পরিবেশটা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পারফর্ম করতে গিয়ে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। আর ঠিক এই কারণে আমি মনে করি, রাহুল দ্রাবিড়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। রাহুলের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল, খেলোয়াড়দের অতীতের বিতর্ক থেকে বের করে এনে একটি ভালো পরিবেশ তৈরি করা।’ এর সঙ্গেই তিনি যোগ করেছেন, ‘কিন্তু এটা কী ভাবে করা সম্ভব? হয় নতুন নিয়ম আনতে হবে, নয়তো সিস্টেমে কিছু পরিবর্তন করতে হবে। কেউই চাইবে না, অধিনায়ক ওর নিজের খেলোয়াড়দের কাছ থেকেই প্রবল চাপ অনুভব করুক। এর জন্য আমি মনে করি প্রধান কোচের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সবার মধ্যে স্বচ্ছতা থাকা দরকার যাতে সর্বোত্তম পর্যায়ে পারফর্ম করতে পারা যায়।’
For all the latest Sports News Click Here