অর্থের অভাবে দিল্লি থেকে কলকাতায় আনা যাচ্ছে না প্রাক্তন জাতীয় চ্যাম্পিয়নের দেহ!
প্রয়াত হলেন তিনবারের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন প্যারা সুইমার অমর্ত্য চক্রবর্তী। একটা সময় তাকে’অযোগ্য’ ঘোষণা করা হয়েছিল তার পাঁচ বছর পর প্যারা সুইমিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে তিনবার জাতীয় চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন সালকিয়ার অমর্ত্য চক্রবর্তী। তবে শেষ পর্যন্ত জীবনের লড়াইয়ে তিনি হেরে গেলেন।বুধবার সকালে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন দিল্লির জিবি পন্ত হাসপাতালে মারা যান অমর্ত্য। মারা যাওয়ার সময়ে তাঁর বয়স হয়ে ছিল মাত্র ১৯ বছর। ছেলের চিকিৎসার জন্য নিজের সঞ্চয়ের সবটা হারিয়েছেন অমর্ত্যের বাবা অমিতোষ চক্রবর্তী। তাঁর সমস্ত সঞ্চয় তাঁর ছেলের চিকিৎসায় ব্যয় করেছিলেন। অমর্ত্যের বাবা দাবি করেছেন যে ক্রীড়া মন্ত্রক এবং প্যারালিম্পিক কমিটি অফ ইন্ডিয়া (পিসিআই) থেকে আর্থিক সহায়তার জন্য বারবার অনুরোধ করেও কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
অমিতোষের আর্থিক অবস্থা এতটাই খারাপ হয়ে গেছে যে তিনি তাঁর ছেলের মৃতদেহ দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার সালকিয়ায় তার নিজের শহরে নিয়ে যাওয়ার জন্য আর্থিক সাহায্যের জন্য অনুরোধ করছেন। অমিতোষ দিল্লিতে পিটিআই-কে বলেন,‘আমার অবস্থা ভিক্ষুকের মতো হয়ে গেছে। কোনও আমানত-পুঁজি নেই,তাঁর চিকিৎসায় সব খরচ করেছি, ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েছি।’অমর্ত্য ছিল তাদের একমাত্র পুত্র।
অমিতোষ বলেছেন,‘সে ভারতের একজন জাতীয় চ্যাম্পিয়ন এবং ২০১৭ প্যারা ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে সেরা সাঁতারু নির্বাচিত হওয়া ব্যক্তির মর্যাদা পেয়েছিলেন।’অমিতোষ তাঁর ছেলে অমর্ত্যকে ২০২১ সালের অক্টোবরে নয়া দিল্লির জিবি পন্ত হাসপাতালে নিয়ে যান কারণ তিনি তাঁর ছেলের চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে বা নয়া দিল্লির এইমস-এ তার চিকিৎসার খরচ বহন করতে পারেননি।
গত বছরের ডিসেম্বরে অমর্ত্যর অস্ত্রোপচার হয় এবং দেশে ফিরে আসেন, কিন্তু চার মাস পর আবার সমস্যা শুরু হয় এবং তাঁকে আবার দিল্লির একটি হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়। অমিতোষ দাবি করেছেন,‘আমরা পিসিআই, ক্রীড়ামন্ত্রী এবং আরও অনেককে চিঠি লিখেছি কিন্তু কেউ সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি। আমরা যদি আর্থিক সাহায্য পেতাম,তাহলে তাঁর সন্তানকে বাঁচানো যেত। চেন্নাইয়ের বেসরকারী হাসপাতালের ডাক্তাররা আমাকে বলেছিলেন যে তাঁর চিকিৎসা করা যেতে পারে কিন্তু আমার উন্নত চিকিৎসার সামর্থ্য নেই।’
অমিতোষ বলেন,‘আমার চাকরির দুই বছর বাকি আছে এবং আমি তাঁর চিকিৎসার জন্য পিপিএফ সহ সমস্ত অর্থ ব্যয় করেছি। এখন তাঁকে কলকাতায় ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো টাকাও আমাদের কাছে নেই।’পিসিআই সাধারণ সম্পাদক গুরশরণ সিং বলেছেন যে তাঁর সংস্থা প্যারা খেলোয়াড়দের আর্থিক সহায়তা দিতে পারে না কারণ এটি নিজেই সরকার এবং অন্যদের অনুদানে চলছে।
গুরশরণ পিটিআই-কে বলেছেন,‘কখনও কখনও PCI এর কাজ চালানোর জন্য টাকাও থাকে না এবং এমন পরিস্থিতিতে আমরা কী ভাবে খেলোয়াড়দের আর্থিক সহায়তা দিতে পারি। আমাদের মূল লক্ষ্য হল দেশে প্যারা স্পোর্টসকে প্রসারিত করা এবং এ দিকে আমাদের সীমিত সম্পদ ব্যবহার করতে হবে। আমাদের পর্যাপ্ত অর্থ থাকলে, আমরা আমাদের খেলোয়াড়দের সাহায্য করতাম কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা এমন পরিস্থিতিতে নেই কারণ আমাদের আর্থিক সংস্থান সীমিত।’
For all the latest Sports News Click Here