পাড়ার ‘দস্যি মেয়েটা’ আর নেই! ঐন্দ্রিলার মৃত্যুতে চোখের জল থামছে না বহরমপুরের
ছোট থেকেই ‘ফাইটার’ ঐন্দ্রিলা। তবে রবিবার সব লড়াই থামিয়ে না ফেরার দেশে পাড়ি দিলেন অভিনেত্রী। মাত্র ২৪ বছরেই চিরঘুমে টলিপাড়ার ‘ঝুমুর’। অভিনেত্রীর পথচলা থেমে গেল শুরুর মাত্র কয়েক বছরের মধ্যেই। তবে এই কয়েক বছরেই একের পর এক চরিত্রের মাধ্যমে দর্শকদের মনের মণিকোঠায় জায়গা করে নিয়েছিলেন অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা। দু-বার ক্যানসার জয়ের পর ‘ফাইটার’ হিসাবেও বাঙালি চিনেছে তাঁকে।
যদিও বহরমপুরের মেয়ে ঐন্দ্রিলাকে একদম অন্যভাবে চেনে তাঁর প্রতিবেশিরা। ছোট থেকেই ‘ডানপিটে’, ‘দস্যি’। তাঁর হাসিতে মেতে থাকতো গোটা পাড়া। আজ সে একদম ‘শান্ত’। বরহমপুরের ইন্দ্রপস্থ এলাকায় বাড়ি ঐন্দ্রিলার। ডাক্তারবাবুর মেয়ে। ছোট থেকেই সবার আদর-যত্নে বড় হয়েছে। তাঁর প্রতিবেশিরা স্তব্ধ ‘মিষ্টি’ (ঐন্দ্রিলার ডাকনাম) অকাল প্রয়াণে। তাঁর এক পাড়ার কাকু বললেন, ‘পাশের বাড়িতেই থাকতো, আমার মেয়ের মতোই বয়স। এমন খবর শুনব ভাবিনি (গলা বুজে এল)। আমার মেয়ের সঙ্গেই খেলাধূলা করে বড় হয়েছে। একসঙ্গে জন্মদিন পালন, কত্ত কী… স্মৃতিতে রয়ে গেল সব’।
ঐন্দ্রিলার মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন না পাড়ার কাকা-কাকিমা, জেঠু-জেঠিমারা! এটা যাওয়ার বয়স হল? ঐন্দ্রিলার এক পাড়ার জেঠু বলেলন- ‘ওদের বাড়ির সবাইকে চিনি। ওর মায়ের ক্যানসার হল, তারপর ঐন্দ্রিলার হল দু-বার। তারপর সেরে উঠল। এই বিজয়া দশমীতেও বাড়ি এসেছিল, আমাকে প্রমাণ করে গেল। ছোট থেকে দেখেছি, খুব খারাপ লাগছে এই খবরটা শুনে। ছোটবেলায় কতবার ওকে স্কুলে নিয়ে গিয়েছি। ভালো অভিনয় করত। পাড়াতেও কত নাটকে অংশ নিয়েছে একসময়’।
ঐন্দ্রিলার এক প্রতিবেশী কাকু জানালেন, ‘শেষবার যখন দাদাগিরিতে গেল, ওর কাকিমাকে ফোন করেছিল। আমাদের কাছে ওর আবদারের শেষ ছিল না। বলত এটা খাব, ওটা করব। দোলের সময় বাচ্চাদের সঙ্গে কত প্ল্যানিং চলত ওর। পাড়ার দস্যি মেয়ে ছিল, খুব তাড়াতাড়ি মায়ার বাঁধনে বেঁধে ফেলত। মিশে যেত সবার সঙ্গে।’
গত ১লা নভেম্বর ব্রেন স্ট্রোকের শিকার হন ঐন্দ্রিলা। এরপর একটানা ২০ দিন হাসপাতালে লড়াই চালিয়েছেন তিনি। ‘ইউয়িংস সারকোমা’-র রোগী ছিলেন অভিনেত্রী। এই রোগকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরেও এসেছিলেন। কিন্তু ক্যানসার পিছু ছাড়েনি। চিকিৎসকদের কথায় ঐন্দ্রিলার শরীরে তৃতীয় বার ফিরে এসেছিল মারণরোগ। হাওড়ার নারায়াণা সুপারস্পেশ্য়ালিটি হাসপাতালের চিকিৎসকদের কথায়, নিঃশব্দে অভিনেত্রীর মাথায় এই রোগ মাথায় ছড়িয়ে পড়েছিল। সম্ভবত সেই কারণেই একাধিক বার স্ট্রোক হয় অভিনেত্রীর। দু-বার লড়াই করে ফিরেছিলেন, তৃতীয়বার আর ফেরা হল না। রবিবার দুপুর ১২.৫৯ মিনিটে দাঁড়ি পড়ল সব লড়াইয়ে।
For all the latest entertainment News Click Here